খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং কোন সময় খেজুর খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি
খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা |
খেজুর বাংলাদেশে তেমন বেশি উৎপাদন হয় না । খেজুর মূলত ইরান, সৌদি আরব, ইরাক,রোমান এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত হয়ে থাকে। এছাড়া আমাদের এশিয়া মহাদেশের বিশেষ করে ভারত,পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে খুব কম উৎপাদিত হয়। মুসলিম প্রধান দেশ গুলোতে খেজুরের বেশি চাহিদা ।
হাদীস এবং কোরআন এ বিভিন্ন সময় তাগিদ দেয়া খাদ্য গুলো যেমন- কালিজিরা, জায়তুন, দুধ,ত্বীন,মধু,দুধ সহ সকল খাদ্যের মধ্যে খেজুর অন্যতম। ধর্মীয় দিক থেকে এই খেজুরের রয়েছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ ঔষধিগুণ এবং উপকারিতা।
প্রোটিনঃ
খেজুরে থাকা প্রোটিন আপনার শরীরের পেশীকে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।
ফ্যাট এবং কোলেস্টরেলঃ
খেজুরে কোন বাড়তি চর্বি এবং কোলেষ্টরেল থাকে না বলে আপনি খেজুর খেলে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না। খেজুর একটি আদর্শ খাদ্য।
আয়রনঃ
খেজুরে পাওয়া যায় আয়রন। মানবদেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান বিশেষ করে নারীদের দেহে আয়রনের চাহিদা পুরুষদের তুলনায় বেশি।
আয়রনের অভাবে রক্তশুন্যতা দেখা দেয়। তাই আয়রনের অভাব পূরণ করতে খেজুরের প্রয়োজনীয়তা বেশি। খেজুর হৃদপিন্ডের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। খেজুর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই কাজ করবে।
ভিটামিনঃ
খেজুরে প্রচুর ভিটামিন রয়েছ । যেমন: ভিটামিন b1 b2 b3 এবং b5। এছাড়াও ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি চাহিদা পূরণের সহজ মাধ্যম হচ্ছে খেজুর। খেজুর খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।
ক্যালসিয়ামঃ
মানুষের হাড় গঠনে সহায়তা করে থাকে খেজুর। কারণ, খেজুরের রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম। খেজুরের ক্যালসিয়াম শিশুদের জন্য খুবই উপকারী যা তাদের মাড়ি গঠনে সহায়তা করে। তাই আপনার শিশুকে খেজুর খেতে উদ্বুদ্ধ করুন।
ফাইবারঃ
এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি কম। কারণ, খেজুরের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে ।
খেজুর খাওয়ার পুষ্টিগুণঃ
মিষ্টি জাতীয় ফলের মধ্যে খেজুর একটি , এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ,পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, ভিটামিন কে সহ প্রচুর খাদ্য গুণ রয়েছে । যা আপনাকে প্রতিদিনের ক্যালরির চাহিদা পূরন করতে সাহায্য করে।
খেজুরের ১০ টি উপকারিতাঃ
১। খেজুরের ক্যালসিয়াম হাড়কে মজবুত করে। খেজুর হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করে তোলে।
২। খেজুর শরীরে পটাশিয়াম এবং সোডিয়ামের সমতা বজায় রাখে ।
৩। খেজুর ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে।
৪। খেজুরে থাকা পুষ্টি উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
৫। খেজুরে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সেরোটোনিন নামক হরমোন উৎপাদন করতে সহায়তা করে যা মানুষকে মানসিক প্রফুলতা দেয়। খেজুর খেলে মন ভাল থাকে।
৬। খেজুর খাওয়ার সাথে প্রচুর পানিও পান করতে হবে কারণ, খেজুরে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে, ।
৭। খাদ্যে অরুচি দূর করতে সহায়তা করে।
৮। খেজুরে থাকা ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়।
৯। খেজুর তারুণ্য এবং যৌবন ধরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। খেজুরে থাকা আয়রন রক্তশূন্যতা দূর করে
১০। খেজুর শরীরের শক্তি হিসেবে কাজ করে। এর শতকরা ৮০ ভাগই চিনি। তাই শুকনো খেজুর বা খোরমাকে বলা হয় মরুভূমির গ্লুকোজ।
সতর্কতা বা অপকারিতাঃ
কিছু কিছু ক্ষেত্রে খেজুর কম খাওয়াই ভাল। খেজুরের অসংখ্য উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষত্রে খেজুর গ্রহনে সতর্ক হওয়া উচিত। যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খেজুর গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি। না হলে ক্ষতির মূখে পরতে পারেন।
No comments:
Post a Comment